দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম, ১৪ ডিসেম্বর: ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার জঙ্গলে এখনও বহাল তবিয়তেই ঘুরে বেড়াচ্ছে ‘বাঘিনী’ জিনাত। বনদপ্তরের ‘বাঘ-বন্দী’ খেলাও ব্যর্থ করে দিয়েছে সে! শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার জঙ্গলে সুন্দরী জিনাতকে পাকড়াও করতে মহিষের টোপ দেওয়া হলেও, বন্দী করা যায়নি এই ‘সুন্দরী’ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার-কে। উল্টে ঘুমপাড়ানি গুলি (ট্রাঙ্কুইলাইজার) এড়িয়ে, ‘টোপ’ দেওয়া মহিষ শাবকটি ছিনিয়ে নিয়ে গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করেছে জিনাত। বনদপ্তরের দক্ষ শিকারির ছোঁড়া গুলি যেভাবে এড়িয়ে গিয়ে শিকার করেছে বাঘিনীটি, তা দেখে মাথায় হাত বনদপ্তরের আধিকারিকদের!

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা বছর তিনেকের বাঘিনী জিনাত এখন ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পূর্ব সিংভূম জেলার জামসেদপুর ডিভিশনের চাকুলিয়া রেঞ্জে বা চাকুলিয়া বনাঞ্চলে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। চিঁয়াবান্ধি জঙ্গলে বহালতবিয়তেই সে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। বনদপ্তরের একটি সূত্রে জানা গেছে, শাল-ইউক্যালিপটাস অরণ্য সমৃদ্ধ পাঁচ থেকে ছয় কিমি লম্বা জঙ্গলে নিজেকে বেশ মানিয়ে নিয়েছে বাঘিনীটি। জঙ্গলের ভিতরে শিকার তো করছেই, সেই সঙ্গে বনদপ্তরের দেওয়া টোপও সাবাড় করছে চোখের নিমেষে!
এদিকে, চাকুলিয়ার চিঁয়াবান্ধির জঙ্গলে অবস্থানকারী জিনাত-কে ঘিরে কার্যত ঘুম উড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনেরও। বনদপ্তর ও পুলিশের তরফে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ইতিমধ্যে। ঝাড়গ্রামে গিধনি, জামবনী, বেলপাহাড়ি রেঞ্জের চরম সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের তরফে। ঝাড়গ্রামের এই সমস্ত এলাকা থেকে চিঁয়াবান্ধির জঙ্গল বিশেষ দূরেও নয়। ১০-১২ কিলোমিটারের মধ্যেই। অন্যদিকে, ২০১৮ সালের মর্মান্তিক ঘটনার (বাঘ-হত্যার) কথা স্মরণে রেখে সতর্ক পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ ও প্রশাসনও। জেলা পুলিশের তরফে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়র বাঘঘরা, শালবনীর ভাদুতলা সহ চারটি জায়গায় বিশেষ ক্যাম্প করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও, মেদিনীপুর বনবিভাগের তরফে লালগড়, পিড়াকাটা, ভাদুতলা ও চাঁদড়াতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। সতর্ক খড়গপুর বনবিভাগও।