দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ১৬ নভেম্বর: ২০২০’র মার্চের পর ২০২১ এর নভেম্বর। প্রায় দু’বছর তথা দীর্ঘ ২০ মাসের বিচ্ছেদ শেষে ফের একবার নিজেদের সেকেন্ড হোম (Second Home) বা দ্বিতীয় গৃহে প্রবেশ করতে চলেছে পড়ুয়ারা। আতিমারীর অতি-মারাত্মক সেই দিনগুলি পেছনে ফেলে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখতে চলেছে তারা। শেষ মুহূর্তে তাই উত্তেজনা তুঙ্গে! তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে, সোমবার (১৫ নভেম্বর) পর্যন্ত দফায় দফায় হয়েছে জীবাণুমুক্ত করণের (স্যানিটাইজেশন) কাজ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সরকারি নিয়ম মেনে, প্রবেশ করানো হবে পড়ুয়াদের। মাস্ক বাধ্যতামূলক। থাকছে স্যানিটাইজার। পড়ুয়াদের বসানো হবে সরকারি নিয়ম মেনে। শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের যোগাযোগ থাকবে নিরন্তর। পড়ুয়াদের প্রতি থাকবে সতর্ক নজর। আর, এইসব প্রক্রিয়া মেনেই, আজ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস। একইসঙ্গে, খুলে যাচ্ছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ও। ফের একবার বিদ্যা প্রতিষ্ঠানগুলি পড়ুয়াদের কলতানে মুখরিত হতে চলেছে! তবে, সব শেষেও শিক্ষকদের আশঙ্কা, “জানিনা কতজন অভিভাবক স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের সন্তানদের পাঠাবেন”! তবে, পড়ুয়ারা যে মুখিয়ে আছে, তাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যেতে তা বলাই বাহুল্য।
এদিকে, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস সফলভাবে চললেই, ধাপে ধাপে সমস্ত শ্রেণীর ক্লাস চালু করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেছেন, “আমরা চাইছি সকলের জন্যই স্কুল খুলে দিতে। ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়া চালু থাকবে।” শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকেই অনুমেয়, খুব শীঘ্রই ষষ্ঠ থেকে অষ্টম এবং তারপর প্রথম থেকে পঞ্চমের ক্লাসও শুরু হবে। তবে, তা হবে ধাপে ধাপে এবং প্রথম পর্যায়ে কোনো অঘটন না ঘটলেই! বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই অর্থাৎ নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিও খুলে যেতে পারে। যদিও, গত কয়েকদিনে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে (গত চব্বিশ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৭৮২, নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ২৭ হাজার, মৃত্যু ৫); তবে শিশু বা কিশোরদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বা অসুস্থ হওয়ার খবর তেমন নেই! কলেজ স্তর থেকে হয়ে গেছে ভ্যাকসিনেশন। ১২ থেকে ১৮ বছরেও মিলেছে ছাড়পত্র। সবমিলিয়ে, পরিস্থিতি আর হাতের বাইরে যাবেনা বলেই মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর, সবকিছু এবার স্বাভাবিক হয়ে যাক, চাইছেন শিক্ষক, অভিভাবক থেকে পড়ুয়া সকলেই! এর মধ্যেই, রবিবার রাজ্য বিদ্যালয় শিক্ষা এবং উচ্চ শিক্ষা দপ্তরে এসেছে খুশির খবর। আন্তর্জাতিক ‘SKOCH GOLD AWARD’ এ ভূষিত হয়েছে ব্রাত্য বসুর হাতে থাকা দুই শিক্ষা দফতর। খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যদিও পুরস্কারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে, রাজ্যের আরও দু’টি দপ্তর পেয়েছে স্কচ অ্যাওয়ার্ড। যথাক্রমে- পর্যটন ও সংস্কৃতি দপ্তর (Tourism and Culture Dpt.) এবং বন ও পরিবেশ দপ্তর (Forest and Environment Dpt.) পেয়েছে SKOCH GOLD AWARD এবং SKOCH SILVER AWARD। প্রতিটি ক্ষেত্রেই, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।