দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ সেপ্টেম্বর: ‘বর্ণপরিচয়’ এর স্রষ্টা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের গ্রাম-ই এতকাল পূর্ণ সাক্ষর ছিলনা! অবশেষে, মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রাম পূর্ণ সাক্ষর হলো। গ্রামের ৬৩ জন নিরক্ষর পুরুষ ও মহিলা-কে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করে তোলা হল, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০২ তম জন্মদিবসের আগে। আগামীকাল (২৯ সেপ্টেম্বর) বাংলা তারিখ (১২ আশ্বিন) অনুযায়ী বীরসিংহের ‘সিংহ শিশু’ বিদ্যাসাগরের জন্মদিন। প্রথা মেনে আগামীকাল (১২ আশ্বিন)-ই সমাজ ও শিক্ষা সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০১ তম জন্মবার্ষিকী এবং ২০২ তম জন্মদিবস পালন করবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সহযোগিতা করবে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতি। প্রথমবারের জন্য এই অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে, বীরসিংহ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। বীরসিংহ ভগবতী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গ্রামের এই ৬৩ জন বাসিন্দা-কে সংবর্ধিত করা হবে। তাঁদের হাতে শংসাপত্র ও পুরস্কার তুলে দেবেন জেলাশাসক তথা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র চেয়ারম্যান ড. রশ্মি কমল। এমনটাই জানিয়েছেন ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, বীরসিংহ গ্রামের জনসংখ্যা ছিল ৩০২৬। বর্তমানে, সেই সংখ্যা আরও কিছু বেড়েছে। ২০১৯ সালের সার্ভেতে ওই গ্রামে ৬৩ জন নিরক্ষর ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৫৫ জনই মহিলা। ৮ জন পুরুষ। তাঁদের বেশিরভাগেরই বয়স ৫০- এর উপরে। বীরসিংহ গ্রামের ওই ৬৩ জনকে সাক্ষর করে তুললে, বিদ্যাসাগরের গ্রামটিকে পূর্ণ সাক্ষর হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ ছিল। ২০১৯ এ ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম দ্বি-শতবর্ষ অনুষ্ঠানের সূচনা লগ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল-কে এই দায়িত্ব দেন। ওই সময়ই জেলাশাসক বীরসিংহ গ্রামের ৬৩ নিরক্ষরকে সাক্ষর করে তোলার জন্য বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিদের সম্পাদক তথা বীরসিংহ ভগবতী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ বেরা-কে দায়িত্ব দেন। শক্তি বাবু বলেন, “সেই থেকেই আমার যাত্রা শুরু। আমি গোটা গ্রামটিকে চারটি এলাকায় ভাগ করি। প্রত্যেক এলাকায় নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য একটি করে পাঠশালা করি। স্কুল ছুটির পর সেখানেই ভজহরি সোরেন, প্রতিমা সাঁতরা, প্রতিমা মল্লিক, লক্ষ্মী মল্লিক, চায়না সাঁতরা, শাসন্তা সাঁতরা, অপর্ণা সাঁতরাদের নিয়ে নিয়মিত পড়াতে বসতাম।” অবশেষে তাঁর পরিশ্রম সফল হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর (২০২১) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের পর থেকে অবশিষ্ট এই ক’দিনে তিনি লক্ষ্মী, চায়না, প্রতিমা ভজহরি-দের পরীক্ষাও নিয়ে নেন। পরীক্ষায় সকলেই পাস করেছেন অর্থাৎ নাম ‘স্বাক্ষর’ (সই) করতে পেরেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস। উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের পর তৎকালীন বাম সরকার একবার উদ্যোগ নিয়েও সফল হতে পারেনি! ‘বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা বিদ্যাসাগরের গ্রাম পূর্ণ সাক্ষর নয়’, এমনই একটা অপবাদ বয়ে বেড়াতে হচ্ছিল শিক্ষা-সংস্কৃতির পীঠস্থান মেদিনীপুর-কে। দায়িত্ব নিয়ে সেই অপবাদ ঘোচালেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল! সৌজন্যে অবশ্যই শক্তি বাবুদের আন্তরিক প্রচেষ্টা। আগামীকাল তাই শুধু ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বাংলা তারিখ অনুযায়ী জন্মদিবস-ই নয়, যথার্থই তাঁকে ‘সম্মান’ উৎসর্গ করবার দিন!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ মে: "দাদু বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন...!" চোখে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ মে: বাবা সবজি বিক্রেতা। মা গৃহবধূ। দারিদ্র্যের সাথে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ৮ মে: রাজস্থানের জয়সলমীরে ভারতের হাতে বন্দি হলো এক পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ মে: খুব সামান্য কয়েকটা বিষয়ে 'অমিল' থাকলেও, দুই…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ মে: মাধ্যমিকের পর এবার উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকাতেও জায়গা…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ মে: দিনেদুপুরে শোনা যেত গুলির আওয়াজ। রাস্তায় পড়ে…