thebengalpost.net
রবীন্দ্রনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপ:

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ সেপ্টেম্বর: নান্দনিক সৌন্দর্যে মোড়া নজরকাড়া মণ্ডপ। ভেতরে প্রবেশ করলেই ধাঁধিয়ে যাবে চোখ! যেন একটুকরো বেনারসের ঘাট। হচ্ছে সন্ধ্যারতিও। খোলা আকাশের নিচে মণ্ডপের চারিপাশে যেন প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন! দর্শনার্থীদের মনে আধ্যাত্মিক অনুভূতি এনে দিতে মানানসই আবহ সঙ্গীতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আরও একটু এগিয়ে গিয়ে, ভেতরে প্রবেশ করলে প্রতিমা দর্শন করা যাবে। মণ্ডপের এই ভাগে প্রবেশ করলে মুগ্ধতা আরও বেড়ে যাবে দর্শকদের। ঠিক যেন সমুদ্রের তলদেশ! চারিপাশে নানা সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদ ভেসে বেড়াচ্ছে। মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির ৫৬-তম বর্ষের এই পুজোর থিমের নাম- ‘এবার ভাবতে হবে’। থিমের সাথেই মানানসই প্রতিমা। শিল্পী প্রশান্ত খাটুয়ার ভাবনা ও সৃজনশীলতায় সমগ্র মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে পরিবেশ-বান্ধব উপকরণ।

thebengalpost.net
রবীন্দ্রনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপ:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

বিশ্ববাংলা শারদ সম্মানের বিচারে এবার যে চারটি পুজো ‘জেলার সেরা পুজো’ হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম মেদিনীপুর শহরের এই রবীন্দ্রনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো। উদ্যোক্তাদের তরফে সম্পাদক শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, “এই থিমের মধ্য দিয়ে আমরা মূলত গঙ্গাদূষণ তথা জলদূষণ প্রতিরোধের বার্তা দিতে চেয়েছি। পৃথিবীর যেকোন উন্নত সভ্যতাই গড়ে ওঠে নদীর তীরে। শুধু তাই নয়, এই গঙ্গানদী আমাদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। তাই গঙ্গা নদীকে কেন্দ্র করে বেনারসে হয় গঙ্গারতি। অথচ, এই নদীকেই আমরা নানাভাবে দূষণে ভরিয়ে তুলি! এই বিষয়টাই আমরা সাধারণ মানুষকে ভাবাতে চেয়েছি। তাই থিমের নাম- এবার ভাবতে হবে।” প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগরের পুজো মানেই শিল্প, ঐতিহ্য আর সৃজনশীলতার মেলবন্ধন। বরাবরই বিশেষ কোন থিমের উপর জোর দেন উদ্যোক্তারা। থাকে সামাজিক বার্তা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তৃতীয়া (বৃহস্পতিবার)-র সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনগরের পুজো উদ্বোধন হয়। আর তারপর থেকেই মণ্ডপে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।

thebengalpost.net
রবীন্দ্রনগরের প্রতিমা:

মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগর ছাড়া জেলার যে ৩টি পুজো বিশ্ববাংলা শারদ সম্মানের বিচারে ‘সেরা পুজো’ মনোনীত হয়েছে, সেগুলি হল- গড়বেতার ধাদিকা সর্বজনীন দুর্গোৎসব, ঘাটাল মহকুমার দাসপুরের সোনাখালি স্কুলপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব সংঘ এবং দাসপুরের কৈগ্যাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব। সোনাখালির থিম- ‘করি যন্ত্রের বন্দনা, তবু যন্ত্রতেই যন্ত্রণা।’ উদ্যোক্তাদের বার্তা, বর্তমান যন্ত্রসভ্যতার যুগে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মানবিক অনুভূতি, নিখাদ সম্পর্ক। আগামীদিনে AI-ই হবে পৃথিবীর চালিকাশক্তি! এই বিষয়টিই নিজেদের থিম ও মানানসই প্রতিমার মধ্য দিয়ে তুলে ধরতে চেয়েছেন উদ্যোক্তারা। কৈগ্যাড়া-র থিম ‘আমি সেই নারী’। থিম ও প্রতিমার মধ্য দিয়ে নারীশক্তির জয়গান গেয়েছেন উদ্যোক্তারা। গড়বেতার ধাদিকা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি ‘নীলকন্ঠ ধাম’-এর অপরূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন নিজেদের মণ্ডপে। এই চারটি পুজো কমিটি ছাড়াও সেরা প্রতিমা, সেরা মণ্ডপ ও সেরা সমাজ সচেতন পুজো বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছে জেলার আরও ৯টি পুজো কমিটি। সেই তালিকা- জেলার সেরা পুজো হিসেবে বিবেচিত হয়েছে মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগর দুর্গোৎসব কমিটি, গড়বেতার ধাদিকা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, দাসপুরের সোনাখালি স্কুলপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব সঙ্ঘ ও কৈগ্যাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। অপরদিকে, সেরা প্রতিমার শিরোপা পেয়েছে মেদিনীপুর শহরের বিবিগঞ্জ সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, শালবনির পিড়াকাটা বাজার দুর্গাপুজো কমিটি এবং খড়্গপুরের বিবেকানন্দ পল্লী পুজো কমিটি। অন্যদিকে, সেরা সমাজ সচেতনতার বিচারে বিবেচিত হয়েছে খড়গপুর শহরের সঙ্ঘশ্রী ক্লাব, মেদিনীপুর সদরের কঙ্কাবতী আঞ্চলিক দুর্গোৎসব কমিটি ও মেদিনীপুর শহরের পুলিশ লাইন হাউসিং পুজো কমিটি।

thebengalpost.net
কৈগ্যাড়া-র মণ্ডপ:

thebengalpost.net
পিড়াকাটা বাজারের প্রতিমা: