দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর ও ঝাড়গ্রাম, ১৩ ফেব্রুয়ারি: বায়ুসেনার বোমে পুকুরে পরিণত হল ধান জমি! ফাটল ধরল গ্রামের একাধিক মাটির বাড়িতে। উড়ে গেল বাড়ির চালাও। কার্যত গোটা গ্রামটাই কেঁপে ওঠে! সোমবার বিকেল ৩-টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের থানার অন্তর্গত চামটিডাঙ্গা গ্রামে। প্রসঙ্গত, কলাইকুন্ডা বায়ু সেনার প্রশিক্ষণ চলাকালীন বোম নিক্ষেপের টার্গেটেড বা উদ্দিষ্ট (বা, চিহ্নিত) জায়গা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে বোম নিক্ষেপ করে ফেলে প্রশিক্ষণরত ফাইটার বিমান! আর এতেই ৪ লক্ষ ভোল্টের হাই টেনশন তার ছিঁড়ে ধান জমিতে বোম পড়তেই কেঁপে ওঠে পুরো গ্রাম। ধান জমি বিশাল আকারের পুকুরে পরিণত হয়। ধান জমির পাশে থাকা বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার ও জমিতে জল দেওয়ার পাম্প পুড়ে যায়। বোমের অয়াজে গ্রামের একাধিক বাড়ির চালা উড়ে যায়। করো আবার বাড়ির মাটির দেওয়াল ফেটে যায়।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল থেকেই বায়ু সেনার প্রশিক্ষণ চলছিল। বায়ু সেনার ফাইটার বিমান কলাইকুন্ডা এয়ার বেস (Kalaikunda Air Base/ Air Force Station) থেকে উড়ান শুরু করে সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত আগাননালীর বোম্বিং এরিয়ায় বোম নিক্ষেপ করে। গ্রামবাসীরা জানান, এদিন সকাল থেকে আগাননালীর বোম্বিং এরিয়ায় দিক থেকে প্রায় ৪ বার বোম ফেলার আওয়াজ পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, দুপুরে হঠাৎ করে চিত্রটা বদলে যায়। বোমের আওয়াজে কেঁপে ওঠে চামটিডাঙ্গা, পেঁচাবিন্ধা, জোড়াশাল, হাঁড়িভাঙ্গা গ্রামগুলি। পেঁচাবিন্ধা গ্রামের বাসিন্দা ধান জমির মালিক স্বপন সিং বলেন, “৫ থেকে ৬ দিন আগেই ধান রুয়েছি। বায়ু সেনার বোম আমার জমিতে পড়ে, দেড় বিঘা জমির মধ্যে প্রায় ২০ কাঠা জমি পুকুরে পরিণত হয়ে গিয়েছে। জমির মাটি পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছে। এই মাটিতে আর ৪-৫ বছর ধান ফলবে না!” তিনি আরও বলেন, “বায়ু সেনাকে আমার জমির ক্ষতিপূরন দিতে হবে।” পেঁচাবিন্ধা গ্রামের বাসিন্দা তথা জমিতে জল দেওয়ার পাম্পের মালিক বিনয় পাত্র বলেন, “বায়ু সেনার বোম পড়ে আমরা পাম্প, বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার এবং আমার চালা বাড়িটি পুড়ে গিয়েছে।” হরিপদ মাহাতো, ভবেশ মাহাতো, কালীপদ মাহাতো সহ অন্যান্য গ্রামবাসীরা বলেন, “আনুমানিক বিকেল তিনটার সময় বিকট বোমের আওয়াজে গোটা গ্রাম কেঁপে ওঠে। মাটির দেওয়ালে ফাট ধরে। বাড়ির চালা উড়ে যায়।” খড়গপুর-চাইবাসা ইন্টারস্টেট ৪ লক্ষ ভোল্টের সিনিয়র ম্যানেজার টিকে সিনহা বলেন, “বায়ুসেনার বোম ৪ লক্ষ ভোল্টের একটি তারে হিট করে এবং তার ছিঁড়ে দেয়। ইন্টারস্টেট এই বিদ্যুৎ পরিষেবার একটি সাইট বন্ধ রাখা হয়েছে এবং অন্য একটি সাইট চালু রয়েছে।” যদিও, এই ঘটনার পর থেকে চামটিডাঙ্গা সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, বায়ু সোনার বোম নিক্ষেপ প্রসঙ্গে বায়ু সেনার পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।