দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ এপ্রিল: অবশেষে ‘ঘাঘর ঘেরা’র নাগপাশ থেকে মুক্ত হল জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলি। ১১০ ঘন্টা পর দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের টাটা লাইনে গড়াল রেলের চাকা! রবিবার রাত্রি ঠিক ৮টা ১২ নাগাদ চালানো হল একটি পণ্যবাহী ট্রেন বা মালগাড়ি। গত ৫ এপ্রিল থেকে চলা ‘রেল টকা’র বাঁধন থেকে মুক্ত হয়ে খেমাশুলির উপর দিয়ে গড়গড়িয়ে ছুটল ট্রেন। এর আগে, রবিবার দুপুরেই পুরুলিয়ার কুস্তাউরে রেলপথ অবরোধ বা ‘রেল টকা’ প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতা অজিত মাহাত। পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে তা উঠলো রাত্রি ৮-টা নাগাদ।

thebengalpost.net
তুলে নেওয়া হল রেলপথ অবরোধ:

অন্যদিকে, কুড়মি সমাজের নেতা রাজেশ মাহাত সন্ধ্যা নাগাদ জানিয়েছেন, তাঁরা (কুড়মি সমাজ) ‘রেল টকা’ বা রেলপথ অবরোধ করেননি। তাঁরা সিআরআই এর কমেন্ট ও জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট পাঠানোর দাবিতে ‘ঘাঘর ঘেরা’ কর্মসূচির ডাক দিয়ে ১ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ এবং ৪ এপ্রিল থেকে খেমাশুলিতে ৬ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিলেন। সেই অবরোধ বা ‘ঘাঘর ঘেরা’ আংশিক ভাবে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আপাতত জাতীয় সড়কে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চলবে যানবাহন। রাত্রি ১ টা থেকে সকাল ৬ টা এবং সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে যানবাহন। বাকি সময়ে চালিয়ে যাওয়া হবে অবরোধ বা ঘাঘর ঘেরা। তবে, আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার নবান্নে মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিদেবী’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর তাঁরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। যদিও, রাত্রি ৯-টা নাগাদ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্তে কুড়মিদের অনেকেই সন্তুষ্ট নন। তাঁদের মতে, ওই অল্প সময়ের জন্য অবরোধ করে আদতে কোনো লাভ হবেনা! তাই, এ নিয়ে তাঁরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, জাতীয় সড়ক অবরোধও পুরোপুরি উঠে যেতে পারে। এদিকে, আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতা অজিত মাহাত জানিয়েছেন, তাঁদের এস.টি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে ৭০ বছর ধরে যে আন্দোলন চলছে, তাতে ইতি টানা হবেনা! অবিলম্বে CRI জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট না পাঠালে ২০২৩ এর ২০ সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় ‘রেল টকা’ এবং ‘ঘাঘর ঘেরা’ কর্মসূচি শুরু করা হবে। অপরদিকে, কুড়মি সমাজের নেতা রাজেশ মাহাত এখনও এই বিষয়ে তাঁদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি। তবে, আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার তাঁরা রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, আজ দুপুরেই মুখ্য সচিবের তরফে কুড়মি নেতাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল একটি চিঠি। তারপরই, পুরুলিয়ার কুস্তাউরে রেলপথ অবরোধ তুলে নিয়েছিলেন অজিত মাহাত। অবশেষে, সন্ধ্যা নাগাদ খেমাশুলিও ‘ঘাঘর ঘেরা’ মুক্ত হল!

thebengalpost.net
বিকেল থেকেই ছিল রেল পুলিশের কড়া তৎপরতা: