দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ ফেব্রুয়ারি: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর (MA)। রয়েছে আইনের ডিগ্রিও (LLB)। পড়াশোনায় বারবারই মেধাবী আসানসোলের সেই সৌমাল্য চৌধুরী-ই যুক্ত চৌর্যবৃত্তির পেশার সঙ্গে! এবার ধরা পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুরের অভিজাত এলাকা বিধাননগরের একটি চুরির ঘটনায়। বুধবার বাঁকুড়া থেকে তাকে পাকড়াও করে মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ। মেদিনীপুর আদালত ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার দুপুরে মেদিনীপুর আদালতে যাওয়ার পথে ক্যামেরার সামনে সৌমাল্য অকপটেই স্বীকার করে, “MA, LLB করেছি।” আপাত শান্ত, নিরীহ ও মার্জিত স্বভাবের সৌমাল্য এও জানায়, এই নিয়ে ৯-টা চুরি সে একাই করেছে। যদিও, বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ৪-৫ বছরে সৌমাল্য শতাধিক চুরির সঙ্গে যুক্ত।
প্রসঙ্গত, মাস খানেক আগে মেদিনীপুর শহরের বিধাননগর এলাকায় একটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। কয়েক লক্ষ টাকার সোনাদানা বা গয়না চুরি হয়ে যায়। তদন্তে নেমে বাঁকুড়া থেকে সৌমাল্যকে গ্রেপ্তার করে মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয় সোনার গয়না। উল্লেখ্য যে, সৌমাল্যর চুরির প্রবণতা ২০১৮ সাল থেকে। ওই সময় আসানসোলে একাধিক চুরির অভিযোগে সৌমাল্যকে প্রথম গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর, হাওড়া সিটি পুলিশ হাওড়া এলাকায় অন্তত ৯-টি চুরির মামলায় সৌমাল্যর জড়িত থাকার কথা জানায়। বছর দেড়েক আগে ঘাটালে দু’টি চুরির ঘটনায় নাম জড়ায় সৌমাল্যর। এবার ফের গ্রেপ্তারি মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশের হাতে।
এ প্রসঙ্গেই এও উল্লেখ্য যে, চুরির অভিযোগে আসানসোল থেকে একবার গ্রেপ্তার করা হয় সৌমাল্যকে। মেধাবী ছেলের গ্রেপ্তারির পরের দিনই আত্মঘাতী হন সৌমাল্যর মা মধুছন্দা চৌধুরী। পেশায় তিনি ছিলেন শিক্ষিকা। অবশ্য ছেলে তাঁর গয়না চুরি দিয়েই হাত পাকায় বলে সূত্রের খবর! আসানসোলে বর্তমানে একাই থাকেন সৌমাল্যর বাবা সুনীল চৌধুরী। তবে, মায়ের মৃত্যুর পরও একটুও বদলায়নি সৌমাল্য! সৌমাল্য জানায়, সে ‘ক্লেপটোম্যানিয়া’ (চুরির নেশা বা প্রবণতা/ Kleptomania) রোগে আক্রান্ত। একাধিকবার রাজ্যের একাধিক পুলিশ আধিকারিকরাও তাই জানিয়েছেন। কিন্তু, এই রোগকে ‘অজুহাত’ করে কি এভাবেই চুরি চালিয়ে যাবে সৌমাল্য? এই রোগের কি কোনো চিকিৎসা নেই? নাকি এই ‘নেশা’ কেই এখন ‘পেশা’ হিসেবে আঁকড়ে ধরেছে সৌমাল্য? উত্তর অজানা!