দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ নভেম্বর: তিলোত্তমা কাণ্ডে এক সিভিকের নৃশংসতা ঘিরে যখন রাজ্য উত্তাল, সেই সময়ই পশ্চিম মেদিনীপুরে আবারও এক সিভিক ভলেন্টিয়ার মানবিকতার নিদর্শন মেলে ধরলেন। দিন কয়েক আগেই দাঁতন থানার সিভিক ভলেন্টিয়ার সুদর্শন মিশ্র কর্তব্যরত অবস্থায় কুড়িয়ে পাওয়া টাকা (১১ হাজার টাকা) ভর্তি মানিব্যাগ ফিরিয়ে সততা ও কর্তব্য নিস্তার পরিচয় দিয়েছিলেন। রবিবার (২৫ নভেম্বর) শালবনী থানার অধীন পিড়াকাটা পুলিশ পোস্টের সিভিক ভলেন্টিয়ার গুরুপ্রসাদ ভান্ডারী (সোমু) হুগলির এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিলেন। জানা যায়, রবিবার রাতে ডিউটি সেরে বাড়ি ফেরার পথে পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ির অধীন গড়মাল বাজারে ছোট জটলা দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন গুরুপ্রসাদ। বাইক থেকে নেমে সেখানে গিয়ে গুরুপ্রসাদ দেখেন, মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে ঘিরে সাধারণ মানুষ নানা কৌতুহলী প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন। এরপরই, যুবককে ওই জটলার মাঝখান থেকে বের করে নিয়ে আসেন গুরুপ্রসাদ।
শীতের রাতে যুবকের সাথে কথা বলে পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ির সিভিক ভলেন্টিয়ার গুরুপ্রসাদ ভান্ডারী জানতে পারেন, বছর ৩০-র যুবকের নাম সুজন মালিক। হুগলি জেলার আরামবাগ থানার ভাটার মোড় গ্রামে তাঁর বাড়ি। ঘুরতে ঘুরতে এই জায়গায় পৌঁছে গেছেন তিনি। এরপরই, গ্রামবাসীদের সহায়তায় রবিবার রাতে গড়মাল গ্রামেই সুজনের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন স্থানীয় যুবক তথা সিভিক ভলেন্টিয়ার গুরুপ্রসাদ। সোমবার সকালে পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অমিত চ্যাটার্জির মারফত যোগাযোগ করা হয় সুজনের বাড়িতে। বিকেল নাগাদ সুজনের বাবা-কাকুরা পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়িতে পৌঁছে সুজনকে বাড়ি নিয়ে যান। পুত্র সম গুরুপ্রসাদকে জড়িয়ে ধরেন সুজনের বাবা ভ্রমর মালিক! সেই সঙ্গে ধন্যবাদ জানান পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সহ আধিকারিকদের।
গুরুপ্রসাদ বলেন, “মানুষ হিসেবে নিজের কর্তব্য পালন করেছি মাত্র!” পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিকরা মনে করিয়ে দেন, ২০১৮ সালে এই গুরুপ্রসাদই এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে বাইকে চাপিয়ে তার অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে আসেন বাড়ি থেকে। গুরুপ্রসাদ শালবনীর মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠে কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন। এক পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড বাড়িতে ফেলে এসেছে শোনা মাত্রই তাকে বাইকে চাপিয়ে, তার বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে আসেন।