thebengalpost.net
প্রাথমিককে নিয়োগের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু'র বার্তা (প্রতীকী ও সংগৃহীত ছবি) :

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ৭ নভেম্বর: বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে (২০২০’র নভেম্বরে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন, প্রাথমিকে ২০১৪ টেট পাস ও প্রশিক্ষিতদের মধ্য থেকে ১৬,৫০০ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। বাকি টেট পাস ও প্রশিক্ষিতদেরও ‘ধাপে ধাপে’ নিয়োগ করে দেওয়া হবে! সেই ঘোষণা মেনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE) ২০২০’র ডিসেম্বর মাস থেকে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, তা প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। ইতিমধ্যে, প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মেধাতালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থী (পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, ১৫২৮৪ জন) রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়ে গিয়েছেন। তবে, ২০১৪ টেট পাস ও প্রশিক্ষিত আরও প্রায় ৮-৯ হাজার চাকরিপ্রার্থী ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরির অপেক্ষায় দিন গুনছেন! তাঁরা নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থী; অর্থাৎ প্রথম মেধাতালিকায় তাঁদের নাম আসেনি। এই ৮-৯ হাজার চাকরিপ্রার্থী অবিলম্বে নিয়োগের দাবি তুলে সারা রাজ্য জুড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন! তাঁদের প্রধান দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি পালন করুন। সকল টেট পাস ও প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করুন!” এ বিষয়ে পর্ষদ কিংবা শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে এখনও কোনও সবুজ সংকেত না এলেও, শনিবার সন্ধ্যায় এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, “প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ীই চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জগদ্ধাত্রী পুজোর পরই আরও প্রায় ১৭০০ জন চাকরিপ্রার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার নিয়োগপত্র পাবেন!” তিনি এও জানিয়েছেন, পুজোর ঠিক আগেই চার হাজার জনকে প্রাথমিকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা অবশ্য ২০০৯ এর মালদা ও উত্তর ২৪ পরগণার চাকরিপ্রার্থী ছিলেন!

thebengalpost.net
প্রাথমিককে নিয়োগের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু’র বার্তা (প্রতীকী ও সংগৃহীত ছবি) :

এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ টেট পাস ও প্রশিক্ষিতদের প্রথম পর্যায়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। তাঁদের মতে, প্রথম পর্যায়ে ১৫২৮৪ জনের নাম মেধাতালিকায় (মেরিট প্যানেলে) বের করে দেওয়া হয়েছিল (চাকরিপ্রার্থীদের মতে, ১২৬৪৬) এবং কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের ইতিমধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়ে গেছে। বাকি আছে মাত্র ১২১৬ টি পদ। সেখানে টেট পাস ও প্রশিক্ষিতদের মধ্যে যাঁরা অফলাইনে আবেদন জমা করেছিলেন তাঁদের জন্য ৪৭৮ ও প্রশ্নভু্ল মামলার ৭৩৮ টি শূন্যপদ ফাঁকা রাখা হয়েছিল। ইতিমধ্যে, অফলাইনে আবেদনকারীদের ইন্টারভিউ হয়ে গেছে (২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর এবং ২৭ অক্টোবর)। বাকি প্রশ্ন ভুল মামলার ৭৩৮ জনের ইন্টারভিউ এখনও বাকি আছে। তাঁদের ইন্টারভিউ নেওয়া হলেই, মোট ১২১৬ এবং আরও প্রায় ৪০০-৫০০ টি শূন্যপদ যোগ করে প্রায় ১৭০০ জনের একটি দ্বিতীয় মেধাতালিকা বের করার ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শনিবার সন্ধ্যায় সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষামন্ত্রী স্বয়ং একথা জানিয়েছেন! এই ১৭০০ জনের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অবশ্য নট ইনক্লুডেড (Not Included) প্রায় ৮-৯ হাজার চাকরিপ্রার্থীও লড়াই করবেন। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতিমতো সকলকেই নিয়োগপত্র দেওয়ার দাবিতে এঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু’র এদিনের মন্তব্য ঘিরে একই সাথে আশা ও নিরাশার দোলাচল শুরু হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে। একদিকে জগদ্ধাত্রী পুজোর পর মাত্র ১৭০০ জনকে নিয়োগের বার্তা, অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি! তবেকি ধাপে ধাপে সবাইকেই নিয়োগ করা হবে, নাকি এই ১৭০০ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলেই, পরবর্তী প্রক্রিয়া অর্থাৎ ২০১৭ সালের টেট রেজাল্ট ও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে? এদিনের সাক্ষাৎকারে তা স্পষ্ট করেননি ব্রাত্য! তবে, নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা এখনও আশায় আছেন, ১৭০০ নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতিমতো ২০১৪ টেট পাস ও প্রশিক্ষিত প্রায় সকলেই চাকরি পাবেন!