দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ আগস্ট: আমেরিকার অ্যারিজোনায় পাথুরে জমির মধ্যে বয়ে গিয়েছে কলোরাডো নদী। আর সেই নদীর জলে পাথর ক্ষয় হয়ে তৈরি হয়েছে আশ্চর্য এক ভূমিরূপ। নাম গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুর থেকে কিছুটা দূরে সবুজে ঘেরা গড়বেতা। আর, গড়বেতার অদূরেই অবস্থান করছে অপরূপ সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ গনগনি। যেখানে শিলাবতী নদীর প্রবাহ, স্রোত এবং দিক পরিবর্তনের ফলে ভূমিক্ষয়ের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে ‘বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’।

thebengalpost.net
‘বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ গনগনি :

চারদিকে লাল ধুলা মাটির পাহাড়ে অসাধারণ ভাস্কর্য। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই খাদ যেন আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ! গনগনি র‍্যাভাইন ভূ-পর্যটকদের কাছেও গ্র‍্যান্ড ক্যানিয়নের রেপ্লিকা হিসেবে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এবার, ভূ-পর্যটক থেকে ছাত্র-ছাত্রী এবং ভূমিরূপ সম্পর্কে উৎসাহী মানুষজনের কথা চিন্তা করে ভৌগলিক ও বিশিষ্ট শিক্ষক ড: শুভেন্দু ঘোষ এই অঞ্চলের ভূমিরূপের উদ্ভব ও বিবর্তন, ভূমিক্ষয়জনিত পরিস্থিতি ও প্রভাব বিষয়ে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। ‘গনগনি দ্য ল্যান্ড অফ ফায়ার’ শিরোনামঙ্কিত সেই বইটি বুধবার, রাখি পূর্ণিমার পবিত্র দানে গড়বেতা ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের সভাকক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হল। উন্মোচন করেন BDO ওয়াসিম রেজা। উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ, বিশিষ্ট শিক্ষক ও সমাজসেবী সুব্রত নিয়োগী, বিশিষ্ট সাংবাদিক রূপশংকর ভট্টাচার্য্য সহ অন্যান্যরা।

বইয়ের লেখক শুভেন্দু ঘোষ বলেন, “গ্র‍্যান্ড ক্যানিয়নের দেওয়ালে বিভিন্ন খাঁজে সংরক্ষিত ভূমিরূপগুলি পলিসাইক্লিক ল্যাটারাইজেশন প্রক্রিয়ার স্বাক্ষর বহন করছে। এখানকার র‍্যাভাইন অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও প্রান্তর এতই মনোমুগ্ধকর যে ভূ-পর্যটনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে শিক্ষামূলক ভ্রমণও ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই, সবার কথা ভেবেই এই বই।” ভূ-পর্যটন বা জিওট্যুরিজমের মাধ্যমে পড়ুয়া ও পর্যটকদের শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলাও এই বই রচনার অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানান শিক্ষক ও গবেষক ড. ঘোষ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এখানে একটি গুহায় ‘বকাসুর’ বাস করতেন। ভীম বধ করেছিলেন তাঁকে। আবার ,স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়কার ইতিহাসও জড়িয়ে আছে এই অঞ্চলের সঙ্গে। সূর্যাস্তের সময় শিলাবতীর রূপ মোহিত করতে পারে। তবে, সেই দৃশ্য দেখতে হলে সূর্যাস্তের আগেই নদীখাত থেকে উপরে উঠে আসতে হবে। শীতকালে বহু মানুষ এখানে পিকনিক করতে আসেন। সম্প্রতি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা ও ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে জায়গাটি নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে কটেজ।

thebengalpost.net
বই প্রকাশ:

thebengalpost.net
গনগনি দ্য ল্যান্ড অফ ফায়ার: