thebengalpost.net
উঠে যাওয়ার মুখে প্রায় ৮ হাজার স্কুল (প্রতীকী ছবি):

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ৩০ আগস্ট: চিরতরে উঠে যাওয়ার মুখে এ রাজ্যের প্রায় ৮ হাজার স্কুল! জল্পনাটা ছড়িয়েছিল গত ফেব্রুয়ারি (২০২৩) মাসেই। জেলাভিত্তিক ৮২০৭টি স্কুলের তালিকাও সেই সময় প্রকাশিত হয়েছিল। ফের সেই তালিকা সামনে নিয়ে আসা হল। আর এর ফলে, ৬ মাস আগের সেই জল্পনাতেই সিলমোহর পড়তে চলেছে বলে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল জানিয়েছে। শিক্ষা দপ্তর সূত্রেও তেমন খবরই বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দপ্তরে পৌঁছেছে বলে জানা যাচ্ছে। জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) ৮ হাজার ২০৭ টি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা এক্কেবারে তলানিতে পৌঁছেছে বিগত প্রায় ১ বছর বা তার থেকেও বেশি সময় ধরে। স্কুল বিল্ডিং আছে। শিক্ষক আছেন। বেঞ্চ আছে। ব্ল্যাক বোর্ড আছে। ক্লাস শুরু ও শেষের ঘণ্টাও আছে। শুধু নেই পড়ুয়া। রাজ্যের ৮ হাজারের বেশি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা নেমে গিয়েছে ৫০’র নিচে। বলা ভালো ৩০’এর ও নিচে। আর তার মধ্যে ২২৬ টি স্কুলে তো একজনও পড়ুয়া নেই!

thebengalpost.net
উঠে যাওয়ার মুখে প্রায় ৮ হাজার স্কুল (প্রতীকী ছবি):

এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে স্কুল শিক্ষা দফতর অন্যান্য দফতরকে তালিকা পাঠিয়ে আর্জি জানিয়েছে, ফাঁকা স্কুল ভবনগুলি কাজে লাগানোর জন্য। শূন্য স্কুলে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগেরও পরিকল্পনা চলছে। কেন এত ছাত্র-ছাত্রী কমছে সরকারি স্কুলে? উঠছে প্রশ্ন। শিক্ষক সংগঠনের একাংশের অভিযোগ, সরকারের নীতি আদতে স্কুলগুলিকে বন্ধ করার জন্য। তবে, বেসরকারি স্কুলের বাড়বাড়ন্ত; সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো এবং পঠন-পাঠনের মানের তুলনায় বেসরকারি স্কুলের এগিয়ে যাওয়া; দীর্ঘদিন নিয়োগ না হওয়া; উৎসশ্রী পোর্টাল সহ বিভিন্নভাবে শিক্ষক বদলিতে দুর্নীতি; অতিমারী-র প্রভাব এবং সর্বোপরি বর্তমান আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারণেই যে এই দুরবস্থা; তা মানছেন রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষাবিদেরা।

উল্লেখ্য যে, ৮২০৭টি স্কুলের তালিকায় এমন কিছু প্রাথমিক বা উচ্চ প্রাথমিক স্কুল আছে যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা শূন্য বা ১০-১৫’র এর কম! অথচ শিক্ষক আছেন। সেই স্কুলগুলোকে অবিলম্বে তুলে দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া বেশিরভাগ স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০-র থেকেও কম। তালিকায় দেখা যায় জঙ্গলমহল পুরুলিয়া জেলার ৬৯৪-টি স্কুল এই তালিকায় আছে। কলকাতার ৫৩১-টি স্কুল আছে এই তালিকায়। এছাড়াও, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৬০১-টি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০ এর কম! ছোটো জেলা হওয়া সত্ত্বেও, ঝাড়গ্রামের ৪৭৯-টি স্কুল আছে এই তালিকায়। একই অবস্থা আলিপুরদুয়ার সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও। দার্জিলিং জেলার অবস্থা যেন সবথেকে খারাপ! এছাড়াও, বাঁকুড়া, বীরভূম, কোচবিহার জেলার হালও অত্যন্ত খারাপ। তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুরের অবস্থা সামান্য ভাল, যেখানে ৩৬৯-টি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০-র কম।