দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ অক্টোবর: দেশের তথা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)। সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সেরা পড়ুয়ারা পড়াশোনা ও গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। সেই আইআইটি খড়্গপুরের ৫৫০ জন পড়ুয়া মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাত অবধি নজিরবিহীন আন্দোলনে সামিল হলেন। বয়কট করলেন দুপুরের খাবার। প্রত্যুত্তরে অবশ্য তাঁদের রাতের খাওয়ার বন্ধ করে দিলেন খাওয়ারের দায়িত্বে থাকা প্রাইভেট মেসের ম্যানেজার! রাত্রি ১১ টা অবধি না খেয়েদেয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে গেলেন পড়ুয়ারা। আন্দোলন ও এই বয়কটের কারণ হল, দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমানের খাওয়ার পরিবেশন করা। বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও, খাওয়ারের মানের কোনো উন্নতি না হওয়ায়, মঙ্গলবার দুপুর থেকে আন্দোলনে শামিল হলেন আইআইটি’র ৫৫০ জন পড়ুয়া। কোভিড বিধি মেনে, অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে এই আন্দোলন করেন তাঁরা।
উল্লেখ্য যে, অতিমারি পরিস্থিতিতে বন্ধ আছে আইআইটি’র হোস্টেল পরিষেবা। বন্ধ আইআইটি চত্বরের ক্যান্টিন, দোকানপাট সবকিছুই। সম্প্রতি, বি.টেক পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছেন। এতজন পড়ুয়ার কথা ভেবে খাওয়ারের জন্য প্রাইভেট মেস চালু করা হয়েছে। আইআইটি’র লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলে এই প্রাইভেট মেস চলছে গত কয়েক মাস ধরে। কিন্তু, পড়ুয়াদের অভিযোগ সেই মেসের খাওয়ারে প্রায়শই পাওয়া যাচ্ছে মশা-মাছি, পোকামাকড়। খাওয়ারের মান অত্যন্ত খারাপ অথচ দাম অনেক বেশি বলেও তাঁদের অভিযোগ। রাতের খাওয়ার হলেও, সন্ধ্যার মধ্যেই সমস্ত পড়ুয়াদের খাওয়ার খেয়ে নিতে হয়, সমস্যায় পড়েন রাত্রি জেগে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা! এই সমস্ত বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এবং অবিলম্বে হোস্টেল পরিষেবা চালু করার দাবি জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেননি! তাই, বাধ্য হয়েই খাওয়ার বয়কট করে, মঙ্গলবার HMC হল ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের সামনে অনশনে বসে পড়েন ৫৫০ জন পড়ুয়া। বয়কট করেন দুপুরের খাওয়ার। আর, সেই ‘অপরাধে’ বন্ধ করে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের রাতের খাবার! ফলস্বরূপ, রাত্রি ১১ টা অবধি পড়ুয়ারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যান। অবশেষে, রাত্রি ১১ টা নাগাদ আধিকারিকরা পৌঁছন সেখানে। জানা গেছে, পড়ুয়াদের সাথে এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে! তাঁদের দাবিদাওয়াগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু, বিশ্বের অন্যতম সেরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই লজ্জাজনক ঘটনায় ইতিমধ্যে নেট মাধ্যমে সরব হয়েছেন দেশ বিদেশে থাকা আইআইটির বিভিন্ন প্রাক্তনী থেকে শুরু করে শিক্ষা মহলের ব্যক্তিত্বরা। যদিও, আইআইটি কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি!